দ্বিতীয় বিবরণ

1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34


অধ্যায় 3

“আমরা ফিরেছিলাম এবং বাশনের রাস্তা ধরে গিয়েছিলাম| ইদ্রিযীতে বাশনের রাজা ওগ এবং তার সমস্ত লোকরা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য বেরিয়ে এসেছিল|
2 প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘ওগ সম্পর্কে ভীত হয়ো না| আমি স্থির করেছি য়ে তাকে আমি তোমাদের কাছে সমর্পণ করব| তার সমস্ত লোকদের এবং তার দেশ আমি তোমাদের দেব| হিষ্বোনে যিনি শাসনকার্য় চালাতেন সেই ইমোরীয় রাজা সীহোনকে তোমরা য়েভাবে পরাজিত করেছিলে, ঠিক সেই ভাবেই তোমরা একেও পরাজিত করবে|’
3 “সেই কারণে প্রভু আমাদের ঈশ্বর বাশনের রাজা ওগকে পরাজিত করতে সাহায্য করেছিলেন| আমরা তাকে এবং তার সমস্ত লোকদের পরাজিত করেছিলাম| তাদের আর কেউই বাকী ছিল না|
4 সেই সময় ওগের অধিকারে য়ে সমস্ত শহর ছিল তার সবগুলোই আমরা অধিকার করেছিলাম| ওগের লোকদের কাছ থেকে আমরা সব শহরগুলোই অধিকার করেছিলাম| এর মধ্যে ছিল বাশনের রাজা ওগের রাজ্য়, অর্গোব নামক অঞ্চলের 60 টি শহর|
5 এই সমস্ত শহরগুলো খুবই শক্তিশালী ছিল| তাদের দেওয়ালগুলি উঁচু, দরজা এবং দরজার ওপরে খিল ছিল খুব শক্ত| সেখানে আরও বহু এমন শহর ছিল য়েগুলোর কোনো প্রাচীর ছিল না|
6 হিষ্বোনের রাজা সীহোনের শহরগুলিকে আমরা য়েভাবে ধ্বংস করেছিলাম, সেভাবেই এদেরও ধ্বংস করেছিলাম| প্রত্যেকটি শহরকে এবং সেখানে বসবাসকারী সমস্ত লোকদের এমনকি সমস্ত স্ত্রীলোকদের এবং শিশুদের আমরা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করেছিলাম|
7 কিন্তু ঐ সমস্ত শহরের সমস্ত গোরু এবং সমস্ত মূল্য়বান দ্রব্যসামগ্রী আমরা নিজেদের জন্য রেখে দিয়েছিলাম|
8 “সেই প্রকারে, আমরা দুজন ইমোরীয় রাজার কাছ থেকে তাদের দেশ অধিগ্রহণ করেছিলাম| যর্দন নদীর পূর্বদিকে অর্ণোন উপত্যকা থেকে মাউন্ট হর্মোণ পর্বত পর্য়ন্ত দেশ আমরা অধিগ্রহণ করেছিলাম|
9 (সীদোনের লোকরা হর্মোণ পর্বতকে বলে সিরিযোন, কিন্তু ইমোরীয়রা এটিকে বলতো সনীর|)
10 উঁচু সমতলভূমির সমস্ত শহরগুলোকে এবং গিলিয়দ অধিগ্রহণ করেছিলাম| বাশনের সমস্ত অঞ্চল, সল্খা এবং ইদ্রিযী পর্য়ন্ত সমস্ত আমরা অধিকার করেছিলাম| সল্খা এবং ইদ্রিযী বাশনের রাজা ওগ-এর রাজ্য়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল|”(
11 অবশিষ্ট রফাযীয়দের মধ্যে কেবলমাত্র বাশনের রাজা ওগ ছিলেন| ওগ-এর খাট ছিল লোহা দিয়ে তৈরী| এটি 13 ফুটেরও বেশী লম্বা এবং 6 ফুট চওড়া ছিল| খাটটি এখনও রব্বা শহরে আছে, যেখানে অম্মোন লোকরা বাস করে|)
12 “সেই কারণে আমরা সেই দেশ আমাদের জন্য অধিকার করেছিলাম| রূবেণ এবং গাদের পরিবারগোষ্ঠীদের আমি এই দেশের অংশ বিশেষ দান করেছিলাম| অর্ণোন উপত্যকার আরোযার নামক জায়গা থেকে গিলিয়দের পার্বত্য দেশ পর্য়ন্ত সমস্ত দেশ এবং এর অন্তর্গত সমস্ত শহর আমি তাদের প্রদান করেছিলাম| গিলিয়দের পার্বত্য দেশের অর্ধেক তারা পেয়েছিল|
13 মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর অর্ধেকাংশকে আমি গিলিয়দের অপর অর্ধেক এবং বাশনের সম্পূর্ণ অঞ্চল প্রদান করেছিলাম|”(বাশন ছিল ওগের রাজ্য| বাশনের কিছু অংশকে বলা হতো অর্গোব| এটিকে রফাযীয় দেশও বলা হতো| মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর যাযীর, অর্গোবের সমস্ত অঞ্চল অধিগ্রহণ করেছিলেন| গশূরীয লোকদের এবং মাখাথীয লোকদের সীমানা পর্য়ন্ত সেই অঞ্চল বিস্তৃত ছিল| সেই অঞ্চলটি যাযীর নামে অভিহিত হয়েছিল| সেই কারণে আজও লোকরা বাশনকে যাযীরের শহর বলে|)
14
15 “আমি মাখীরকে গিলিয়দ প্রদান করেছিলাম|
16 এবং রূবেণের পরিবারগোষ্ঠীকে এবং গাদ-এর পরিবারগোষ্ঠীকে আমি সেই দেশ প্রদান করেছিলাম, য়েটি গিলিয়দে শুরু হয়েছে| এই দেশটি অর্ণোন উপত্যকা থেকে য়ব্বোক নদী পর্য়ন্ত বিস্তৃত| উপত্যকাটির মধ্যাঞ্চল হল একটি সীমানা| য়ব্বোক নদীটি হল অম্মোনীয় লোকদের সীমানা|
17 মরুভূমির কাছের যর্দন নদী ছিল তাদের পশ্চিম সীমানা| এই অঞ্চলের উত্তরে গালিল হ্রদ এবং দক্ষিণে রয়েছে মৃতের সমুদ্র (লবণ সমুদ্র)| এটি পূর্বদিকের পিস্গার পাহাড়গুলির নীচে অবস্থিত|
18 “সেই সময়, আমি তোমাদের এই আদেশ দিয়েছিলাম; ‘প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের যর্দন নদীর পূর্বদিকের্ দেশ বাস করার জন্য দিয়েছেন| কিন্তু এখন তোমাদের য়োদ্ধারা অবশ্যই তাদের অস্ত্র তুলে নেবে এবং অন্যান্য ইস্রায়েলীয় পরিবারগোষ্ঠীকে নদী অতিক্রম করার কাজে নেতৃত্ব দেবে|
19 তোমাদের স্ত্রীরা, তোমাদের সন্তানরা এবং তোমাদের সমস্ত গবাদিপশু (আমি জানি তোমাদের অনেক গবাদিপশু আছে) অবশ্যই এই শহরগুলিতে থাকবে, য়েটা আমি তোমাদের দিয়েছি|
20 কিন্তু তোমরা অবশ্যই তোমাদের ইস্রায়েলীয় আত্মীযবর্গকে সাহায্য করবে, যতক্ষণ পর্য়ন্ত না তারা যর্দন নদীর অপর পারে তাদের প্রভুর দেওয়া দেশ অধিগ্রহণ করে| প্রভু তাদের সেখানে শাস্তি দেওয়া পর্য়ন্ত তাদের সাহায্য করো, ঠিক য়েমন তিনি এখানে তোমাদের জন্য করেছিলেন| এরপর আমি তোমাদের য়ে দেশ দিয়েছি সেখানে ফিরে আসতে পার|’
21 “তখন আমি যিহোশূয়কে বলেছিলাম, ‘প্রভু তোমাদের ঈশ্বর এই দুজন রাজার কি দশা করেছেন সেটা তুমি স্বচক্ষে দেখেছ| তুমি য়ে রাজ্য়েই প্রবেশ করবে, সেখানেই ঈশ্বর এই একই কাজ করবেন|
22 এই সকল দেশের রাজাদের ভয় পেও না, কারণ প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের জন্য যুদ্ধ করবেন|’
23 “এরপর আমার বিশেষ কিছু করার জন্য আমি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করেছিলাম| আমি বলেছিলাম,
24 ‘প্রভু আমার মনিব, আমি তোমার সেবক| আমি জানি য়ে তুমি তোমার চমত্কারিত্বের এবং শক্তির সামান্য অংশই আমাকে দেখিয়েছ| তুমি য়ে মহত্‌ এবং শক্তি সম্পন্ন কাজ করেছ, তেমন কাজ করতে পারে এমন কোনো ঈশ্বর স্বর্গে অথবা পৃথিবীতে নেই|
25 কৃপা করে আমাকে যর্দন নদী পার হতে এবং সেই উত্তম দেশ প্রত্যক্ষ করতে দাও| আমাকে সুন্দর পার্বত্য দেশ এবং লিবানোন দর্শন করতে দাও|’
26 “কিন্তু তোমাদের জন্য প্রভু আমার ওপরে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন| তিনি আমার কথা শুনতে অস্বীকার করেছিলেন| প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘এটাই যথেষ্ট! এই প্রসঙ্গে আর কোনো কথা বোলো না|
27 পিস্গা পর্বতের সর্বোচ্চ শিখরে যাও| এর পশ্চিম দিক, উত্তর দিক, দক্ষিণ দিক এবং পূর্ব দিক প্রত্যক্ষ কর| তুমি এই সব চোখে দেখতে পাবে, কিন্তু কখনই যর্দন নদী অতিক্রম করতে পারবে না|
28 তুমি অবশ্যই যিহোশূয়কে নির্দেশ দেবে| তুমি অবশ্যই তাকে উত্সাহিত করবে এবং তাকে সবল করবে| কারণ যর্দন নদী অতিক্রম করার কাজে যিহোশূয় লোকদের নেতৃত্ব দেবে| তুমি কেবল দেশটি দেখতে পাবে, কিন্তু যিহোশূয় তাদের ঐ দেশে নিয়ে যাবে| সে তাদের ঐ দেশটির অধিগ্রহণে এবং সেখানে বাস করতে সাহায্য করবে|’
29 “সেই কারণে, বৈত্‌-পিযোরের অপর দিকের উপত্যকাতেই আমরা থেকেছিলাম|”